টমেটোর ফল ছিদ্রকারী পোকার বৈশিষ্ট্য
ক) এ পোকার মথ হালকা বাদামী রঙ এর।
খ) প্রাপ্ত বয়স্ক ও বড় আঁকারের কীড়ার গায়ের রঙ কালচে ধূসর থেকে হালকা বাদামী এবং গায়ের উপর লম্বালম্বি দাগ থাকে।
গ) এই পোকার পুত্তলী গাঢ় বাদামী ও দেহের পিছনের অংশে লম্বালম্বি দুটি ধারালো কাঁটা থাকে।
ঘ) এরা দিনের বেলায় তৎপর থাকে তবে সাধারণত সন্ধ্যার শুরুতে বেশি তৎপর দেখা যায়।
ঙ) কীড়া ১৪-১৬ দিনের মধ্যে পুত্তলিতে পরিণত হয়।
চ) সাধারণত ৪-৮ সেঃ মিঃ মাটির গভীরে পুত্তলী সম্পন্ন হয় এবং ১০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যে পুত্তলী পূর্ণাঙ্গ পোকায় পরিণত হয়।
ছ) টমেটোর ফল ছিদ্রকারী পোকা প্রায় এক মাসে (৪ সপ্তাহে) এদের জীবন চক্র সম্পন্ন করে।
টমেটোর ফল ছিদ্রকারী পোকার আক্রমণে ক্ষতির লক্ষণ
ক) স্ত্রী পোকা পাতার উপরে ও ফুলের মধ্যে ডিম পাড়ে। এক একটি স্ত্রী পোকা ৫০০টি পর্যন্ত ডিম দিতে পারে।
খ) ডিম ফুটে কীড়া বের হয়। এ পোকার কীড়াগুলো ফল আসার আগে বিশেষ করে গাছের পাতা ও কচি ডগা খেয়ে বড় হয়।
খ) ফল আসার পরে এই পোকার কীড়াগুলি বেড়ে ওঠা ফলের ভিতর ঢুকে শাঁস ও বীজ খেয়ে থাকে।
গ) সাধারণত তাপমাত্রা বাড়ার সাথে সাথে (ফেব্রুয়ারী মাসে শেষ সপ্তাহ হতে) এদের আক্রমণের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে দেখা যায়।
টমেটোর ফল ছিদ্রকারী পোকার দমন ব্যবস্থাপনা
ক) সমন্বিত দমন ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এ পোকা নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব।
খ) প্রতিদিন পোকাসহ আক্রান্ত পাতা, ফল সংগ্রহ করে ধ্বংস করে ফেলতে হবে।
গ) গাছের নিচে ঝরে পড়া পাতা, ফুল ও ফল সংগ্রহ করে মাটিতে পুঁতে ফেলার ব্যবস্থা করতে হবে।
ঘ) ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করে পুরুষ মথকে সহজে নিয়ন্ত্রন করা যায়। প্রতি ১ বিঘা জমিতে ১৫ টি ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করা যায়।
ঙ) আলোর ফাঁদ ব্যবহার করে উক্ত পোকার পূর্ণাঙ্গ মথ মেরে ফেলার ব্যবস্থা করতে হবে।
চ) ক্ষেতে পতঙ্গভূক পাখী বসার ব্যবস্থা করতে হবে।
ছ) সপ্তাহে একবার পোকার ডিম নষ্টকারী পরজীবী পোকা (ট্রাইকোগ্রামা কাইলোনিজ) ও ক্রীড়া নষ্টকারী পরজীবী পোকা (ব্রাকন হেবিটর) হেক্টর প্রতি ১ গ্রাম ও ১ বাংকার বা ৮০০-১২০০ হারে পর্যায়ক্রমিকভাবে মুক্তায়িত করতে হবে।
জ) সর্বশেষে আক্রমণ তীব্র হলে ফ্লুবানডায়ামাইড গ্রুপের কীটনাশক ০.৪ গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে অথবা সাইপারমেথ্রিন গ্রপের কীটনাশক রিপকর্ড/সিমবুশ ১ মিঃলিঃ প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে অথবা ইমামেকটিন বেনজোয়েট (প্রোক্লেম) প্রতি লিটার পানিতে ১ গ্রাম হারে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
ঞ) এছাড়া আগাম সতর্কতা হিসেবে আগাম বীজ বপন এবং সুষম সার ব্যবহার করতে হবে।
আরও তথ্যের জন্য আপনার নিকটস্থ উপসহকারী কৃষি অফিসার অথবা উপজেলা কৃষি অফিসে যোগাযোগ করুন।
তথ্য সূত্র- উদ্ভিদ সংরক্ষণ উইং, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
সংকলনে- মোঃ শাহিন মিয়া